মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন
মোঃ শিহাব উদ্দিন (গোপালগঞ্জ) জেলা প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী গ্রামের মাসুম শেখ জন্ম থেকেই শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। বয়স মাত্র ৩০। ছোটবেলায় বাবাকে হারানোর পর মা আবেজান বেগমকে নিয়ে শুরু হয় জীবনের কঠিন সংগ্রাম। বিয়ের পর পরিবারে সদস্য সংখ্যা বাড়লেও থেমে থাকেনি তার জীবনযুদ্ধ।
চার বছর আগে একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি অটোভ্যান কিনে ছিলেন মাসুম। সেই ভ্যান চালিয়েই চলছিল সংসারের খরচ, মা ও স্ত্রীকে নিয়ে তার ছোট্ট জীবনের বড় যুদ্ধ। কিন্তু গত ৩১ জুলাই রাতের আঁধারে চুরি হয়ে যায় সেই উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম অটোভ্যানটি। এরপর শুরু হয় আরও কঠিন সময়। সাহায্যের আশায় ঘুরেছেন অনেকের দুয়ারে, কিন্তু কোনো সহানুভূতি মেলেনি।
তবে হতাশার মাঝে আশার আলো হয়ে আসেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার। কুশলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসতিয়াক হোসেনের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে তিনি দ্রুত মাসুমের বাড়িতে ছুটে যান। সান্ত্বনা দেন, ভরসা দেন।
পরদিন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রকাশ চক্রবর্তীকে মাসুমের জন্য ভ্যান কেনার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন ইউএনও। এরপর ৬ আগস্ট সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মাসুম শেখকে ২০ হাজার টাকার একটি চেক হস্তান্তর করা হয়।
এ আর্থিক সহায়তা পেয়ে আবেগাপ্লুত মাসুমের পরিবার। চোখে জল নিয়ে মাসুমের মা আবেজান বেগম বলেন, “আমার প্রতিবন্ধী ছেলে ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতো। ভ্যানটি চুরি যাওয়ার পর আমরা অনেকের কাছে গিয়েছি, কিন্তু কেউ সাহায্য করেনি। পরে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ম্যাডাম (ইউএনও) জানতে পেরে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি আমাদের নতুনভাবে বাঁচার আশার আলো দেখিয়েছেন।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার বলেন, “বিষয়টি জানতে পেরে আমি সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু পেরেছি, মাসুম শেখের জন্য করেছি। আগামীতেও অসহায় মানুষের পাশে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রশাসন থাকবে।”

All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।